মানবতার কন্ঠ ডেস্ক
অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ঋণ মঞ্জুরিপত্র ব্যতিত মার্কেন্টাইল ব্যাংক এর প্রধান শাখা হতে ব্যাক টু ব্যাক এল সি ও অন্যান্য ঋণ সুবিধার মাধ্যমে ৭ কোটি সাইত্রিশ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ ও ঋণ এর সুদ পরিশোধ না করার দায়ে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান সহ অপর কয়েকজন আসামীর বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে চার্জশীট জমা দিয়েছেন দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), ভুয়া রেকর্ডপত্র সৃষ্টি করে সরকারি সম্পত্তি বন্ধক দেখিয়ে প্যাট্রিক ফ্যাশনস লি: নামের ৮ কোটি টাকা উত্তোলনপূর্বক সুদসহ ১০ কোটি তিরাশি লক্ষ বার টাকা একচল্লিশ পয়সা পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করেন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক কয়েকজন কর্মকর্তা। এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসের ৫ তারিখ মতিঝিল থানায় মোট ১২ (বার) জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক সহকারী পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। মতিঝিল থানার দণ্ডবিধি ৪০৬/৪০৯/৪২০/১০৯ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং জিআর ৯৭/২০১৮। যাহা বর্তমানে মেট্টো স্পেশাল মামলা নং ২৭২/২২ হিসেবে চলমান রয়েছে।
এ মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা দণ্ডবিধি উক্ত ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা অর্ন্তভূক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। উক্ত প্রতিবেদনে ৪ নং আসামী হিসেবে বর্তমান স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের বর্তমান এমডি হাবিবুর রহমানকে পলাতক দেখিয়ে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের উপসহকারী পরিচালক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। গত ১৮ জানুয়ারী ২০২৪ তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী, ক্রোকী ও হুলিয়া পরোয়ানা ইস্যুর জন্য আদালতে আর্জি জানিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক আদালতে দাখিলকৃত চার্জশীট অনুযায়ী এই মামলার অন্যতম আসামী হাবিবুর রহমান ২০০০-২০০৩ সালে মার্কেন্টাইল ব্যাংকে কর্মরত অবস্থায় ব্যাংকের গ্রাহক প্যাট্রিক ফ্যাশনস লি: এর নামে ঋণ প্রস্তাবের সুপারিশ করেন। এবং পরবর্তীতে পুন:তফসিলের সুপারিশ করেন। তিনি উক্ত ব্যাংকের ক্রেডিট ডিভিশনের তৎকালীন ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।ঐ সময় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী কমিটির সভায় প্যাট্রিক ফ্যাশনস লি: নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সিআইবি রিপোর্ট সম্পর্কিত অসত্য তথ্য প্রদানের মাধ্যমে ঋণ প্রস্তাব প্রতারণামূলকভাবে অনুমোদন করান। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তি পত্র না পাওয়ার ফলে উক্ত ঋণ প্রস্তাবের মঞ্জুরিপত্র ইস্যু করা হয় নি।
মো: হাবিবুর রহমান মার্কেন্টাইল ব্যাংকে যোগদানের পূর্বে প্রাইম ব্যাংকের ক্রেডিট ডিভিশনে কর্মরত ছিলেন। প্যাট্রিক ফ্যাশনস লি: নামে প্রতিষ্ঠানটি লোন সম্পর্কে প্রাইম ব্যাংকের ঋণ খেলাপি গ্রাহক হওয়া ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ঋণ মঞ্জুরিপত্র ইস্যু না হওয়া সত্ত্বেও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের প্রধান শাখা কর্তৃক উক্ত ঋণটি অসৎ উদ্দেশ্যে প্রাইম ব্যাংক হতে অধিগ্রহন করা হয়। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের প্রধান শাখার অন্যান্য কর্মকর্তার যোগসাজশে এমন প্রতারণার আশ্রয় নেয়া হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয় ।
পরবর্তীতে মোঃ হাবিবুর রহমান মার্কেন্টাইল ব্যাংকের প্রধান শাখার ক্রেডিট ইনচার্জ হিসেবে অন্যান্য আসামীদের সহিত উক্ত ঋণ পুন:তফসিল এর সুপারিশ করেন। কিন্তু উক্ত ঋণের মঞ্জুরিপত্র ইস্যু না হওয়ার বিষয়টি তিনি জেনেশুনে গোপন করেন। যা মামলার চার্জশীটে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ, পরস্পর যোগসাজশ ও ক্ষমতার অপব্যাবহার হিসেবে উল্লেখিত হয়েছে।
Leave a Reply