আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর একটি ইউনিটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের চিন্তা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ওই ইউনিটে কমতে পারে মার্কিন সহায়তা। তবে এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিকে মোটেও পরোয়া করছেন না ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি জানিয়েছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ওপর যেকোনো নিষেধাজ্ঞা তিনি প্রত্যাখ্যান করবেন। এমনকি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াইয়ের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি সোমবার (২২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দেশটির সেনাবাহিনীর ওপর যেকোনো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একটি ইউনিটে সহায়তা কমানোর পরিকল্পনা করছে এমন খবরের পর তিনি এই অবস্থান জানান।
রোববার (২১ এপ্রিল) বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, আমি আমার সমস্ত শক্তি দিয়ে এর বিরুদ্ধে লড়াই করব।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাক্সিওস নিউজ সাইট জানায়, অধিকৃত পশ্চিম তীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর নেতজাহ ইয়েহুদা ব্যাটালিয়নের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরেপ করতে পারে।
মূলত ‘নেতজাহ ইয়েহুদা’ নামের এই ইউনিটটি ফিলিস্তিনের দখলকৃত পশ্চিম তীরে মোতায়েন রয়েছে। পশ্চিম তীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বহু অভিযোগ রয়েছে নেতজাহ ইয়েহুদার বিরুদ্ধে।
অধিকৃত পশ্চিম তীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) ইউনিটগুলোতে মার্কিন সামরিক সহায়তা হ্রাস করা হতে পারে এমন প্রতিবেদন সম্পর্কে গত সপ্তাহে জিজ্ঞাসা করা হলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছিলেন: ‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি; আপনারা সামনের দিনগুলোতে সেসব সিদ্ধান্ত দেখতে পাবেন বলে আশা করতে পারি।’
অবশ্য ইসরায়েলের প্রধান মিত্র ওয়াশিংটন এর আগে কখনোই ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর বা আইডিএফের কোনও ইউনিটের সহায়তা স্থগিত করেনি।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, নেতজাহ ইয়েহুদা ‘আন্তর্জাতিক আইন মেনেই’ কাজ করছে।
তারা বলেছে, ব্যাটালিয়নের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে এই রিপোর্টের পরও আইডিএফ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয়। আইডিএফ কাজ করছে এবং আইন অনুযায়ী কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা তদন্ত করতে কাজ করে যাবে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট নেতজাহ ইয়েহুদার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিশ্ব যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক আগের চেয়ে আরও ঘনিষ্ঠভাবে দেখছে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) অ্যাক্সিওস তিনটি মার্কিন সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নেতজাহ ইয়েহুদার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বা পদক্ষেপ ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
‘নেৎজাহ ইহুদা’ নামক পদাতিক ব্যাটালিয়নটি অতীতে ডানপন্থি সন্ত্রাস ও ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে বিতর্ক রয়েছে। ২০২২ সালে ৮০ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি-মার্কিন নাগরিক ওমর আসাদের মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখযোগ্য। ব্যাটালিয়নের সেনাদের হাতে আটক থাকা অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত্যুর সময় তিনি হাতকড়া পরা ও চোখ বাঁধা অবস্থায় ছিলেন।
Leave a Reply