প্রতিবেদক
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের তেজগাঁও থেকে এফডিসি গেট সংলগ্ন ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘের ডাউন রাম্প চালু হয়েছে। এটিকে নগরবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘ঈদ উপহার’ বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আগামী বছরের শুরুতে পুরো প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
বুধবার (২০ মার্চ) ‘এফডিসি গেট সংলগ্ন ডাউন রাম্প উন্মুক্তকরণ’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিমানবন্দরের কাওলা থেকে, বনানী, ফার্মগেট, কমলাপুর হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত এ প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার, র্যাম্পসহ প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। এতে মোট ব্যয় ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। বর্তমানে প্রকল্পের অগ্রগতি ৭২ দশমিক ৫১ শতাংশ।
এ সময় অগ্রগতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘কাজের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন করা উচিত নয়। দিনরাত কাজ চলছে। আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করেছি। বিশ্ব পরিস্থিতিতেও কিছু জটিলতা আছে। যেসব দেশ এসব প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত, তাদের সঙ্গে কনকারেজের বিষয়ে আছে। ঘাটে ঘাটে তাদের কনকারেজ নিতে হয়। বিশ্বের বর্তমান প্রেক্ষাপটে যন্ত্রপাতি আমদানিতে কিছু সমস্যা হয়। আমাদের অনাদর ও অনিচ্ছায় প্রকল্প দেরি হচ্ছে- এটা ঠিক নয়।’ প্রকল্পে অর্থায়ন নিয়ে কোনও জটিলতা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফান্ডিংয়ে জটিলতা থাকলে কাজগুলো হচ্ছে কী করে?’
রমজানে ঢাকায় যানজট নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ইফতারের পরে তো যানজট থাকে না। রোজার মাসে কোনও কোনও সময়ে যানজট হয়, সবসময় থাকে না। যানজট নিরসনে আমাদের সব পরিকল্পনা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হওয়ায় সময় ও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে। আরও পাঁচটি মেট্রো লাইন বাকি আছে, দুটির কাজ চলমান। এগুলো সম্পন্ন হয়ে গেলে যানজট ধীরে ধীরে আরও কমে যাবে।’
এসময় বিআরটি প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়েও কথা বলেন মন্ত্রী। তিনি জানান, যাদের কাজ দেওয়া হয়েছে তাদের গাফিলতির কারণে একটিমাত্র প্রকল্প বিলম্বিত। আশা করি ডিসেম্বরের আগেই বিআরটিসির বিশেষায়িত বাস চলে আসবে। আর ডিসেম্বর থেকে বিআরটি প্রকল্প পুরোপুরি চালু হবে। এর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী তেজগাঁও থেকে এফডিসি গেট সংলগ্ন ডাউন র্যাম্পে যান চলাচল উন্মুক্ত করেন। এ সময় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিনুল্লাহ নূরী, সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, শুক্রবার জলদস্যুদের নতুন দল জাহাজটির দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে নাবিকদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়।
এ অবস্থায়, অভিযান চালিয়ে জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধার কার্যক্রমকে সমর্থন করছে না মালিকপক্ষ এবং সরকার। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে বলে মনে করছে তারা। বিশেষ করে নাবিকদের জীবনহানির শঙ্কা করছে। একই মত পোষণ করছেন নৌ বিশেষজ্ঞরা। বলছেন, অভিযান না চালিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
অন্যদিকে ১২ মার্চ জাহাজ জিম্মির পর বেশ কয়েকবার অবস্থান পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ১৪ মার্চ রাতে সোমালিয়ার গারাকাদ উপকূল থেকে সাত নটিক্যাল মাইল দূরে দস্যুরা প্রথমে জাহাজটি নোঙর করে। এরপর গারাকাদ উপকূল থেকে সরিয়ে ১৫ মার্চ ৫০ নটিক্যাল মাইল উত্তরে জাহাজটিকে নিয়ে যায়। এরপর গদবজিরান উপকূল থেকে মাত্র চার নটিক্যাল মাইল দূরে জাহাজটির সর্বশেষ অবস্থান শনাক্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। সে সময় জাহাজটি সোমালিয়া উপকূল থেকে ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল। দস্যুদের কাছে জিম্মি হয় ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সোমালিয়ার গারাকাড উপকূল থেকে ২০ মাইল দূরে জাহাজটি নোঙর করে। পরে সেটি আরও এগিয়ে উপকূলের ৭ মাইলের মধ্যে অবস্থান নেয়। কিন্তু শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ জাহাজটি আরারও চলতে শুরু করে।
সর্বশেষ ২৩ নাবিকসহ জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজটিকে সোমালিয়ার গারাকাড থেকে গোদবজিরান উপকূলে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আগের অবস্থান থেকে এটি প্রায় ৫০ নটিক্যাল মাইল উত্তরে। বর্তমানে জাহাজটি উপকূল থেকে মাত্র ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে রয়েছে।
Leave a Reply