ইউরোপীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে অস্ট্রিয়াকে ২-১ গোলে হাড়িয়ে তুরস্ক পৌঁছে গেল কোয়ার্টার ফাইনালে। জার্মানির লাইপজিগ শহরে স্থানীয় সময় রাত নয়টায় খেলা শুরু হতেই রক্ষণভাগের খেলোয়াড় মেরিহ ডেমিরাল প্রথম মিনিটে গোল করে তুরস্ককে এগিয়ে নেন।
শুরুর মাত্র ৫৭ সেকেন্ডের মধ্যেই এই গোল। প্রথম কর্নার শটে অস্ট্রিয়ার ক্রিস্টোফ বাউমগার্টনার, স্টেফান পোশ ও গোলরক্ষক প্যাট্রিক পেন্টজকে ফাঁকি দিয়ে বলটি মেরিহ ডেমিরালের পায়ে পড়ে যায়। গোল করতে ভুল করেননি ডেমিরাল।
ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে এটি ছিল দ্বিতীয় দ্রুততম গোল। এর আগে আছেন শুধু আলবেনিয়ার নেদিম বেইরামি, যিনি গ্রুপ পর্বে ইতালির বিপক্ষে ২৩ সেকেন্ডে গোল করেছিলেন।
প্রথম মিনিটেই গোল করে তুরস্ককে এগিয়ে যাওয়ার পর শুরু হয় জার্মানিজুড়ে বসবাসরত ২৯ লক্ষ তুর্কি বংশোদ্ভূত মানুষের উল্লাস। এক গোলে এগিয়ে থেকে বিরতির পর তুর্কি সমর্থকদের উল্লাসের মাত্রা আরও বাড়িয়ে ৫৯ মিনিটে মেরিহ ডেমিরালের দ্বিতীয় গোল।
গতকাল জার্মানিতে ঠান্ডা ও বৃষ্টিস্নাত আবহাওয়া থাকলেও তুরস্কের সমর্থকদের আনন্দ-উল্লাসের কমতি ছিল না। তবে এই আনন্দের বাঁধ ভাঙে রাজধানী শহর বার্লিনে। বার্লিনে বসবাস করে দুই লক্ষ তুর্কি। ম্যাচ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার তুর্কি সমর্থক রাস্তায় নেমে আসেন। তুরস্কের চাঁদ–তারাখচিত লাল পতাকা নিয়ে গাড়িবহর বের করে বার্লিনের কিছু অংশের ট্রাফিক ব্যবস্থা অচল করে ফেলেন তাঁরা। ভেঁপু বাজিয়েও বার্লিন সরগরম করে রাখেন ওই সমর্থকেরা। বিজয়ের পর জার্মানিতে মোটর শোভাযাত্রা ইতিমধ্যেই তুরস্কের সমর্থকদের মধ্যে ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।
বার্লিনের পত্রিকা বার্লিনার জাইটুং জানিয়েছে, খেলা চলাকালে শহরের নয়েকোলন এলাকার হারম্যান স্কোয়ার ও আশপাশের রাস্তাগুলোর বেশির ভাগই ফাঁকা ও শান্ত ছিল। খেলার দ্বিতীয়ার্ধে তুরস্কের দ্বিতীয় গোল করার পরই ভক্তরা আস্তে আস্তে রাস্তায় নেমে এসে আনন্দ প্রকাশ করতে থাকেন। ফ্যান জোন এবং রাজধানীর জনসাধারণের দেখার স্থানগুলোতে খেলা চলাকালে সমর্থকেরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন, উল্লাস করেন এবং দলের জয়ের জন্য নাচতে থাকেন।
অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে জয়ের পর উল্লাস করতে অনেকেই রাস্তায় নেমে আসেন। রাজধানী বার্লিনের শার্লটেনবার্গ, কুর্ফুরস্টেন্ডাম এলাকার রাজপথে ঐতিহ্যবাহী মোটর শোভাযাত্রায় কয়েক শ গাড়ির বহর ওই এলাকাগুলো অচল করে দেয়। শহরের অন্যান্য স্থানেও উচ্চ স্বরে ভেঁপু বাজিয়ে আতশবাজি পোড়ানো হয়। গভীর রাত অবধি এই বাঁধভাঙা আনন্দ–উৎসব চলে। বার্লিনের পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল রাতের ঘটনায় বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। গতকাল জার্মানিতে কিছুটা ঠান্ডা ও বৃষ্টিস্নাত আবহাওয়া সত্ত্বেও বার্লিনের বান্ডেনবার্গ গেটসংলগ্ন প্রধান পাবলিক অ্যারেনাতে ২৩ হাজার লোক খেলাটি উপভোগ করেন।
Leave a Reply