নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দি অবস্থায় রাখা হয়েছে। এখনও সময় আছে, তাকে মুক্তি দেন। নতুবা যেকেনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকুন।
শনিবার বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে নয়াপল্টন দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সমাবেশের মূল লক্ষ্য একটাই- দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি। তিনি এ দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কারাগারে ছিলেন। টানা ৯ বছর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করেছেন। কোনভাবেই তিনি পিছুপা হননি। ছাত্রদেরকে সাথে তিনি স্বৈরাচারকে হটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের কাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে, অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ব্যাংকগুলো লুট করে টাকা বিদেশে পাচার করছে। স্তম্ভিত হই, যখন দেখি সাবেক সেনা প্রধান গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য জড়িত। সাবেক পুলিশ প্রধান হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। এতো মাত্র শুরু। এরকম আজিজ, বেনজির ও মতিউর হাজার হাজার আছে। আজকে বড়বড় রাঘব বোয়ালকে ধরা হচ্ছে না। অথচ, গণতন্ত্রের মাকে ছয়বছর যাবত বন্দী রাখা হয়েছে। এখনও সময় আছে বেগম জিয়াকে মুক্তি দেন। নতুবা যেকেনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকুন।
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আন্দোলনের কোন ফল আমরা ঘরে আনতে পারিনি। কারণ যথা সময় আমরা মাঠে থাকি না। ২৮ অক্টোবর আমাদের ফলাফল চূড়ান্ত হওয়ার কথা ছিল, সেই সময় যদি একটা পাল্টা মিছিল করতে পারতাম, তবেই আমাদের ফলাফল চূড়ান্ত হতো।
যেকোন মূল্যে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি করে বিএনপির এই প্রভাবশালী নেতা বলেন, দেশনেত্রী মুক্তির আন্দোলন আর থামবে না। তাকে মুক্ত করেই ছাড়বো।
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই সরকার প্রত্যেকটি সেক্টরের প্রধান দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত। এই সরকারই তো দুর্নীতিগ্রস্ত। বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা শুধু তার জন্য নয়, প্রয়োজন এই দেশের মানুষের জন্য।
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে আইনের শাসন নেই। মানুষের ভোটাধিকার নেই। বাক স্বাধীনতা নেই। মানবাধিকার নেই। জীবনের নিরাপত্তা নেই। যেখানে অন্যায়ই আইনে পরিণত হয়েছে। কেউ কথা বললে গুম-খুন হয়। জেলখানায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, আমাদের আওয়াজ একটাই, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আর গৃহে আবদ্ধ থাকতে দিবো না। ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা লড়াই চালিয়ে যাবো। আর ঘরে ফিরে যাবো না, যতক্ষণ পর্যন্ত না দেশনেত্রীর মুক্তি না মিলবে।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।
Leave a Reply