নিজস্ব প্রতিবেদক:
নেত্রকোণায় পৃথক ঘটনায় এক গৃহবধূসহ তিন শিশু পানিতে ডুবে মারা গেছে। রোববার পূর্বধলা ও দুর্গাপুর উপজেলায় এসব ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ কর্মকর্তারা।
নিহতরা হলো তাসকিন মিয়া (৭), নোমান মিয়া (৮), সালমা আক্তার (২১) ও জাহাঙ্গীর মিয়া (৫)। চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পূর্বধলা থানার ওসি মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম ও দুর্গাপুর থানার ওসি উত্তম চন্দ্র দেব।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তাসকিন সদর উপজেলার সাতপাই (উল্লা বাড়ি) এলাকার মো. আল মামুনের ছেলে, নোমান পূর্বধলার ধলামূলগাঁও ইউনিয়নের পাঁচমারকেন্ডা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। সালমা একই উপজেলা আগিয়া ইউনিয়নের টিকুরিয়া গ্রামের নওয়াব আলীর মেয়ে ও জাহাঙ্গীর আলম গৌরীপুর উপজেলার কুল্লাতলী গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শনিবার বিকেলে তাসকিন বাবা-মায়ের সঙ্গে পূর্বধলার পাঁচমারগেন্ডা গ্রামে নানা আনসার আলীর বাড়িতে বেড়াতে যায়। নানার বাড়িতে থাকা খালাতো ভাই নোমানকে সঙ্গে নিয়ে বিকেলে ঘুরতে বের হয়ে ফিরে না আসায় স্বজনরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে রোববার সকালে নানি পারভিন আক্তার বাড়ির পাশের দেইড়া নদীতে তাদের ভাসতে দেখে উদ্ধার করে নিজবাড়িতে নিয়ে যান।
একই দিন সকালে উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের টিকুরিয়া গ্রামের নবাব আলীর মেয়ে ও বিশকাকুনী ইউনিয়নের বিশকাকুনী গ্রামের মফিজুল ইসলামের স্ত্রী সালমা আক্তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। সকালে হাতমুখ ধোয়ার সময় বাড়ির সামনের পুকুরে পড়ে যান সালমা। ঘরে ফিরতে দেরি হওয়ায় সালমার মা জোৎস্না বেগমসহ বাড়ির লোকজন পুকুরে খোঁজাখুঁজি করে উদ্ধার করে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অপরদিকে বৃহস্পতিবার দূর্গাপুরের তেরি বাজার এলাকায় ভাইয়ের বাড়িতে নাতি জাহাঙ্গীরকে সঙ্গে নিয়ে দাদি উম্মে হানি বেড়াতে এসেছিলেন। সকালে শিশু জাহাঙ্গীর সেমাই খেয়ে আরও দুই শিশুর সঙ্গে বাড়ির সামনে সোমেশ্বরী নদীতে গোসলে যায়। পরে গোসল করার সময় জাহাঙ্গীর ডুবে যায়। অন্য দুই শিশু বাড়ি ফিরে জাহাঙ্গীর নদীতে ডুবে গেছে জানালে পরিবারের লোকজন নদীতে গিয়ে খোঁজাখোঁজি শুরু করেন।
একপর্যায়ে শিশু জাহাঙ্গীরের নিথর মরদেহ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত শিশু জাহাঙ্গীর ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার কুল্লাতলী গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে। জহিরুল পেশায় রিকশাচালক।
এ বিষয়ে পূর্বধলা থানার ওসি মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মর্গে তিনজনের মরদেহ রয়েছে। দ্রুত আইনগত প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
এ দিকে দুর্গাপুর থানার ওসি উত্তম চন্দ্র দেব বলেন, মরদেহ থানা হেফাজতে রয়েছে। তার বাবা-মাকে খবর দেওয়া হয়েছে তারা আসলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply