নিজস্ব প্রতিবেদক:
কলকাতায় বাংলাদেশের সংসদ সংসদ আনোয়ারুল আজীম হত্যাকাণ্ডে অন্যতম সন্দেহভাজন মো. সিয়াম হোসেন নেপালে আটক হয়েছেন। বৃহস্পতিবার নেপাল পুলিশ তাঁকে আটক করেছে বলে কাঠমান্ডুর একটি কূটনৈতিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সিয়ামকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ইতিমধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তাও জানিয়েছেন, তাঁরা নেপালে সিয়ামের আটকের বিষয়টি অনানুষ্ঠানিকভাবে জেনেছেন। তবে এ বিষয়ে ঢাকায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেননি।
এই ঘটনায় ঢাকায় তিনজন এবং কলকাতায় একজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এই অবস্থায় আটক সিয়ামের বিষয়ে নেপালের সঙ্গে কলকাতা পুলিশও যোগাযোগ রাখছে বলে কাঠমান্ডুর একটি সূত্র থেকে জানা গেছে।
আনোয়ারুল হত্যার তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, গত ১৩ মে কলকাতায় আনোয়ারুল আজীমকে হত্যার পর লাশ গুম করার ক্ষেত্রে সিয়ামও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এরপর তিনি কলকাতা থেকে নেপাল চলে যান। এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে পুলিশ যে আক্তারুজ্জামান ওরফে শাহিনের কথা বলছে, তিনিও ২০ মে ঢাকা থেকে দিল্লি হয়ে কাঠমান্ডু যান। পরে সেখান থেকে দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।
কাঠমান্ডুতে আটক সিয়ামের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিনে। তিনি আক্তারুজ্জামানের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন বলে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট পুলিশ সূত্র থেকে জানা গেছে।
তবে এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামি শিমুল ভূঁইয়াসহ তিনজন ঢাকায় গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে আছেন। তাঁদের কাছ থেকে তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সিয়াম হোসেনকে দেশে ফেরানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশের দিক থেকেও যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে খুনের ঘটনায় ভারতের কলকাতার নিউ টাউন থানায় সেখানকার পুলিশ একটি মামলা করেছে। আবার ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন আনোয়ারুলের ছোট মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস। পারস্পরিক তথ্য বিনিময়ের মধ্য দিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও কলকাতা পুলিশ মামলার তদন্ত করছে। এই ঘটনায় ঢাকায় তিনজন এবং কলকাতায় একজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এই অবস্থায় আটক সিয়ামের বিষয়ে নেপালের সঙ্গে কলকাতা পুলিশও যোগাযোগ রাখছে বলে কাঠমান্ডুর একটি সূত্র থেকে জানা গেছে।
তবে এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামি শিমুল ভূঁইয়াসহ তিনজন ঢাকায় গ্রেপ্তার হয়ে রিমান্ডে আছেন। তাঁদের কাছ থেকে তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সিয়াম হোসেনকে দেশে ফেরানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশের দিক থেকেও যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, আক্তারুজ্জামান ও সিয়ামের পাসপোর্ট, মুঠোফোন নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ইন্টারপোলকে অবহিত করেছেন। এই দুজনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ডিবির পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও নেপালে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া আক্তারুজ্জামানকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরাতে ভারতেরও সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কলকাতায় আনোয়ারুলকে খুনের আগে খুলনা অঞ্চলের দুর্ধর্ষ চরমপন্থী সন্ত্রাসী শিমুল ভূঁইয়া এবং শিলাস্তি রহমান নামের এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে ৩০ এপ্রিল কলকাতায় যান মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান। খুনের ছক সাজিয়ে তিনি ১০ মে আকাশপথে ঢাকায় ফেরেন। ১৩ মে তাঁর ভাড়া করা ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্য খুন হন। ১৮ মে আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজ হয়েছেন মর্মে কলকাতার বরাহনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হলে ২০ মে ঢাকা থেকে আকাশপথে দিল্লি হয়ে কাঠমান্ডু যান আক্তারুজ্জামান। কাঠমান্ডুর একটি সূত্র বলছে, আক্তারুজ্জামানের সঙ্গে নেপালে তাঁর সহযোগী সিয়ামের সঙ্গে বৈঠক হয়। এর পরপরই আক্তারুজ্জামান নেপাল থেকে দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্র চলে যান বলে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে।
আক্তারুজ্জামান ও সিয়ামের পাসপোর্ট, মুঠোফোন নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ইন্টারপোলকে অবহিত করেছেন। এই দুজনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ডিবির পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও নেপালে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া আক্তারুজ্জামানকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরাতে ভারতেরও সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
এদিকে আট দিনের রিমান্ড শেষে ঢাকায় গ্রেপ্তার তিন আসামি শিমুল ভূঁইয়া, তাঁর ভাতিজা তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানকে গতকাল শুক্রবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। ডিবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই তিন আসামির আরও পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
Leave a Reply