নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে রোববার রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলে। সোমবার ভোরের দিক থেকে বৃষ্টির দাপট বাড়তে থাকে। এখন বিকেল পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত আছে। সঙ্গে রয়েছে দমকা হাওয়া। বিরতিহীন বৃষ্টিতে নাকাল রাজধানীবাসী।
সোমবার (২৭ মে) সকালে ভারী বর্ষণে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতায় আরও সংকট বাড়িয়েছে। তার ওপর ৩ ঘণ্টা মেট্রোরেল বন্ধ রাখায় স্টেশনে স্টেশনে চরম ভোগান্তিতে পড়েন কর্মজীবীরা।
বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার ফলে যানবাহন সংকটের কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, সোমবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে রাজধানীতে। আজ দিনভর বৃষ্টি চলতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল অবশ্য দুর্বল হয়ে পড়েছে। আজ বেলা ১১টার দিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৯ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। ঘূর্ণিঝড়ের জন্য পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে দেয়া ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। আবার চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে দেয়া ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতও প্রত্যাহার করা হয়েছে। চার বন্দরেই ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
শুধু উপকূল নয় পূর্বাভাস ছিল, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল সারা দেশেই প্রভাব ফেলবে কমবেশি। পূর্বাভাস মেনে রাজধানীতেও রেমাল আসে। তবে উপকূলের মতো বিধ্বংসী বেশে নয়, ইটপাথরের নগরীতে রেমাল প্রভাব ফেলে ঝড়ো বাতাস আর বৃষ্টি ঝরিয়ে।
রাজধানীতে রাতের গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি সকালে রূপ নেয় ভারি বর্ষণে। কাজের প্রয়োজনে বাইরে বের হয়েই নাকাল হতে হয় কর্মজীবীদের। বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হওয়ায় ছাতা উড়িয়ে নেয়ার উপক্রম হয়। খেটে খাওয়া মানুষরাও বিপাকে পড়েন। তবে গত কয়েক দিনের অস্বস্তিকর গরমের পর প্রকৃতি কিছুটা শীতল হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেন বেশির ভাগ মানুষ।
পথচারীরা বলেন, কয়েক দিনের গরমের পর বৃষ্টিতে প্রকৃতি শীতল হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টির সঙ্গে চারদিক থেকে দমকা বাতাসে ছাতা নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ জানান, সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে রাজধানীতে। তবে একই সময়ে দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে চট্টগ্রামে, ১৬৯ মিলিমিটার।
বৃষ্টির কারণে আজ মেট্রোরেল চলাচলে সকাল থেকেই বিঘ্ন ঘটছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত চলাচল বন্ধই ছিল। এরপর চালু হলেও চলাচল নির্বিঘ্ন নয়। নগরজীবনের যাতায়াতের এই নতুন ও জনপ্রিয় অনুষঙ্গের সমস্যার কারণে রাস্তায় প্রচুর যানজট সৃষ্টি হয়েছে। নগরীর কিছু কিছু এলাকায় পানি জমেছে।
রেমালজনিত জলাবদ্ধতা নিরসনে মাঠে সিটি করপোরেশনের কর্মীদের উপস্থিত ছিল সরব।
এদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে, সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা সব বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
ভারি থেকে অতি ভারী বর্ষণ মঙ্গলবার (২৮ মে) পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে ঝড়বৃষ্টির প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে বুধবার (২৯ মে) পর্যন্ত।
Leave a Reply