দৈনিক মানবতার কন্ঠ
ধামরাইয়ে হবু পুত্রবধূর ভাইরাল নাচের ভিডিও দেখে বিয়ে ভেঙে দিলেন পাত্রের বাবা’ এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় ধামরাই নিউজ টোয়েন্টিফোর নামের একটি ফেসবুক পেজে। আর এ খবরে সামাজিক মাধ্যমে তীব্র আলোচনার জন্ম হয়েছে। তবে ওই পেজটিতে খবরের সঙ্গে ছবি জুড়ে দেওয়া হয় একটি বিয়ে বাড়ির গেটের।
এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর কিছু পেজে গেল বছর ধামরাই সরকারি কলেজের পিঠা উৎসব অনুষ্ঠানে নৃত্যে অংশ নেওয়া এক ছাত্রীর ভিডিও প্রকাশ করে লেখা হয় ওই ছাত্রীরই বিয়ে ভেঙেছে। বিষয়টি মুর্হুমুহু শেয়ার হয় বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও আইডিতে। আদতে বিষয়টি সম্পূর্ণ ভুয়া।
তবে স্বাভাবিকভাবেই, নাচের পোস্টটি যতটা শেয়ার হয়েছে, ডিসক্লেইমার ভিডিওটি অতটা ছড়ায়নি। এই খবরটি আসলে ভুয়া। ওই তরুণীর সঙ্গে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। পেজটিতে কথিত অডিও ক্লিপও প্রকাশ করা হয়, যেখানে এক পক্ষ আইনি হুমকি দিচ্ছেন এবং অপর পক্ষ সরাসরি বলেন, আমাকে ফাঁসিতেও ঝুলাতে পারেন, তবু এমন যাত্রাপালার মেয়ে আমার ঘরে উঠবে না।
এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে থাকে এক তরুণীর ছবি ও নাম, যিনি স্থানীয় একটি কলেজের শিক্ষার্থী। অনেকেই তাকে বিয়ে-বিচ্ছেদের কেন্দ্রীয় চরিত্র বলে চিহ্নিত করতে থাকেন। ফলস্বরূপ, তরুণীকে ঘিরে নানা কটাক্ষ, মন্তব্য ও অপমান শুরু হয়।
ভাইরাল সংবাদের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে একই ফেসবুক পেজ থেকে নতুন একটি পোস্টে জানানো হয়, তারা যে বিয়ে-বিচ্ছেদের কথা বলছে, সেটি ভাইরাল হওয়া মেয়েটির ঘটনা নয়। পেজ কর্তৃপক্ষ সরাসরি স্বীকার করে, ভাইরাল হওয়া ভিডিও ও মেয়েটিকে নিয়ে জনমনে যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, সেটি একেবারেই ভুল। তারা অনুরোধ জানায়, মেয়েটির ছবি আর শেয়ার না করার এবং তাকে হেনস্তা না করার।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণ হলো, যাচাই না করে তথ্য ছড়ানো কতটা ভয়ংকর হতে পারে। একজন নির্দোষ তরুণী, যিনি কেবল একটি কলেজ অনুষ্ঠানে নাচে অংশ নিয়েছিলেন, তাকে ‘অশ্লীল’ তকমা দিয়ে সামাজিকভাবে হেনস্তা করা হলো। তার ছবি ও পরিচয় ছড়িয়ে দেওয়া হলো মিথ্যা ভিত্তিতে, যা একদিকে আইনের চোখে শাস্তিযোগ্য, অন্যদিকে নৈতিক দিক থেকেও গর্হিত।
আইনজীবীরা বলছেন, এ ধরনের ভুল তথ্য প্রচার ও হেনস্তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় স্পষ্ট অপরাধ। ভুক্তভোগী পরিবার চাইলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। অপরদিকে, তরুণীর সামাজিক সম্মান ক্ষুণ্ণ হওয়ায়, এটি একটি মানহানির মামলা হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে
Discover more at Max-Zero
Powered by Max-Zero
Leave a Reply