তানজিলা আক্তার মাসুমা, ইডেন কলেজ প্রতিনিধি
ঢাকায় নারী ও শিশুদের প্রতি ক্রমবর্ধমান সহিংসতা, বিশেষ করে মাগুরার ৮ বছরের শিশু আছিয়ার নির্মম ধর্ষণের বিচারের দাবিতে ইডেন মহিলা কলেজসহ সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে রাস্তায় নেমেছে। দ্রুত বিচার ও ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে তারা বিক্ষোভ ও মশাল মিছিলের আয়োজন করে।
সন্ধ্যা ৭টায় ইডেন কলেজ ক্যাম্পাসের বকুলতলা থেকে শুরু হওয়া মশাল মিছিলটি কলেজের হলপাড়া প্রদক্ষিণ করে। শিক্ষার্থীরা প্ল্যাকার্ড হাতে ধর্ষণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে মূল ফটকের বাইরে আসে এবং ঢাকা কলেজসহ সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিলিত হয়। মিছিলটি আজিমপুর মোড় হয়ে জহির রায়হান রোড পেরিয়ে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেয়।
সেখানে তারা প্রতীকী ধর্ষকের মূর্তি আগুনে পুড়িয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করে। তবে পথচারীদের দুর্ভোগ কমানোর লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা সড়কের পাশে অবস্থান নেয়। এ সময় আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, “এই রমজান মাসে পথচারীদের কষ্ট দিতে চাই না, কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ থামবে না।”এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই ধর্ষণের ঘটনা দেখি। কিন্তু বেশিরভাগ অপরাধী শাস্তি পায় না। আমরা চাই, সরকার দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নিক।”
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “প্রতিদিন পত্রিকায় ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও সহিংসতার খবর দেখি। কিন্তু এসব অপরাধের সঠিক বিচার হয় না। আমরা চাই, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক এবং অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাক।”
বিচার ব্যবস্থার অবহেলা নিয়ে ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন মৌ বলেন, “আমরা এমন দেশে বাস করি যেখানে ন্যায়বিচার চাইতে হলে রাস্তায় নামতে হয়! যদি আইন ঠিকমতো কার্যকর না হয়, তবে এই সংবিধান বদলানো হোক।”
শিক্ষার্থীরা স্পষ্টভাবে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, “যদি আছিয়ার ধর্ষণের বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে না হয়, তবে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচির মাধ্যমে আছিয়ার ধর্ষণের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি সারাদেশে নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। তারা মনে করে, ধর্ষণের বিরুদ্ধে সবাইকে একসঙ্গে রুখে দাঁড়াতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কোনো নারী বা শিশু এমন বর্বরতার শিকার না হয়।
শিক্ষার্থীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই আন্দোলন শুধু আছিয়ার জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নয়, বরং সমাজের অন্যদেরও সচেতন করবে এবং ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকারকে বাধ্য করবে।
Discover more at Max-Zero
Powered by Max-Zero
Leave a Reply