চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাট এলাকায় মেঘনা নদীতে থেমে থাকা একটি জাহাজে দুর্বৃত্তদের হামলায় ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় জাহাজে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে জুয়েল নামের এক ব্যক্তি জীবিত আছেন।
সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে চাঁদপুরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, গলা আংশিক কাটা থাকায় কথা বলতে পারছিলেন না জুয়েল। এসময় তিনি কাগজে অনেক কষ্টে তার নাম ও মোবাইল নম্বর লিখেছেন জুয়েল। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে নিহত সাতজনের মধ্যে ছয়জনের নাম-পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার আজিজুল ও মাজেদুল এবং লস্কর সবুজ শেখ। এদের বাড়ি নড়াইল ও ফরিদপুর জেলায়।
নৌ পুলিশের এসপি সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘৯৯৯-এ খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সহকারী পুলিশ সুপারসহ একটি টিম নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। যে জাহাজটিতে মরদেহ পাওয়া গেছে সেটির নাম এমভি আল-বাখেরা। জাহাজটি মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে মাঝির চরে নোঙর করা অবস্থায় ছিল। ওই জাহাজের বিভিন্ন কক্ষে পাঁচজনের মরদেহ পাওয়া গেছে। তিনজন গুরুতর আহত অবস্থায় ছিল। চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হলে তাদের মধ্যে দুজন মারা যান। একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। কীভাবে সাতজনের মৃত্যু হলো তা এখনো জানা যায়নি। তবে তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে মারাত্মক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জাহাজের মালিকের বক্তব্য অনুযায়ী সারবোঝাই জাহাজটি চট্টগ্রামের কাফলু থেকে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে যাচ্ছিল। গতকাল চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা জাহাজটি আজ সিরাজগঞ্জে এসে পৌঁছার কথা ছিল। কিন্তু জাহাজের খবর না পেয়ে জাহাজের মালিক অন্যান্য জাহাজের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। একপর্যায়ে অন্য জাহাজের কর্মচারীর মাধ্যমে তার জাহাজটি চাঁদপুরে মেঘনা নদীর পাড়ে আছে শুনে ৯৯৯-এ পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক এবং কোস্ট গার্ডের দুটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। নৌ পুলিশ এবং কোস্ট গার্ডের যৌথ অবস্থানে নিহতদের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়। এ ব্যাপারে নৌ পুলিশ দুটি মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, ‘এটি হত্যাকাণ্ড নাকি ডাকাতি, নাকি তাদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে তা নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।’
Leave a Reply