নিজস্ব প্রতিবেদক:
একসময় যাদের পেছনে মানুষের ভিড় ছিল, যারা ছিলেন পরাক্রমশালী, সেই ভিআইপি নেতারা আজ একা। কারাগারে বন্দি থাকার সময় তাদের চারপাশে নেই ভক্ত-অনুসারীদের ভিড়, এমনকি নিকটাত্মীয়রাও সরে গেছেন দূরে। যারা এই অবস্থার মুখোমুখি, তাদের অনেকেই একসময় রাজনৈতিক দলের বড় নেতা ছিলেন। কেউ সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ছিলেন। আবার কেউ ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিংবা বিচার বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্তমানে এ ধরনের বিশেষ বন্দির সংখ্যা ৬৬ জন। এর মধ্যে ৩৭ জন ডিভিশনপ্রাপ্ত এবং তিনজন হাসপাতালের রোগী। বন্দিদের সাথে এখন পর্যন্ত কেউ দেখা করতে আসেননি, এমনকি কোনো নিকটাত্মীয়ও নয়। ৫ আগস্টের পর থেকে গ্রেফতার হওয়া ভিআইপি বন্দিরা মোবাইল ফোনেও কথা বলার সুযোগ পাননি।
কারাগারে তাদের সময় কাটানোর বিষয়ে জানা গেছে, অনেকে সকালে নামাজ পড়ে দিন শুরু করেন। কেউ কেউ ঘুম থেকে দেরিতে ওঠেন। তারা চা-নাশতা করে হাঁটাহাঁটি, পত্রিকা পড়া, গল্প করা এবং বই পড়া দিয়ে সময় কাটান। দুপুরের পর গোসল করে আবার নামাজ পড়েন এবং বিকালে হাঁটেন। ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিরা খাট, চেয়ার-টেবিলসহ কিছু অতিরিক্ত সুবিধা পান। তারা টেলিভিশন দেখারও সুযোগ পান। তাদের জন্য দুই বেলা মাছ-মাংসের ব্যবস্থা থাকে, তবে পরিমাণ সব বন্দির জন্য সমান। এছাড়া তারা কাজের লোকের সেবাও পান, যারা তাদের কাপড় ধোয়া এবং আনুষঙ্গিক কাজ করে দেন।
কারাসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভিআইপি বন্দিরা বিশেষ সুবিধা দাবি করলেও তাদের কারাবিধি অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধাই দেওয়া হচ্ছে। ১৫ দিন পর নিকটাত্মীয়রা বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তবে বর্তমানে বন্দিদের সাথে নিকটাত্মীয়দের সাক্ষাৎ হয়নি। ম্যানেজার টাইপের কেউ তাদের মামলার খোঁজ নিচ্ছেন। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে, বন্দিদের মোবাইল ফোনে কথা বলার নিয়মিত সুযোগ বন্ধ রয়েছে।
বর্তমানে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি থাকা ডিভিশনপ্রাপ্ত বিশেষ বন্দিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।
Leave a Reply