মানবতার কণ্ঠ ডেস্ক
বিএনপির প্রয়াত শ্রমিক নেতা বাকির হোসাইনকেও হার মানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ’র সিবিএ নেতা সারোয়ার হোসাইন। কর্তৃপক্ষও অজ্ঞাত কারণে সারোয়ার হোসাইনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। তিনি পরিবার ও আত্নীয় স্বজনদের চাকরি দিয়ে নিজস্ব বলয় গড়ে তুলেছেন বলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। সারোয়ার হোসাইন নিজেও একজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী। সিবিএ নেতা হবার বদৌলতে অসম্ভবকে সম্ভব করে সংস্থায় একচ্ছত্র কায়েম করেছেন কুখ্যাত এই নেতা। তিনি এতোই ক্ষমতাধর যে, শ্যালকের চাকরির বয়স সীমা পেরিয়ে গেলেও তাকেও চাকরি দিতে সক্ষম হয়েছেন। স্ত্রী কামরুন নাহার মলি ট্রেসার পদে চাকরি করেন। কিন্তু স্বামী সিবিএ নেতা হওয়ায় তিনি অফিস না করেই শুধু হাজিরা খাতায় সই করে মাসিক বেতন ভাতা ভোগ করছেন বলে অভিযোগ জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিআইডব্লিউটিএ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন বি ২১৭৬ এর সাধারণ সম্পাদক (মেয়াদ উত্তীর্ণ) হলেন সারোয়ার হোসাইন। এক বছর আগেই আবুল-সারোয়ার এর মেয়াদ শেষ হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে মামলা থাকার দোহাই দিয়ে ইলেকশন দিচ্ছেন না। সারোয়ার হোসাইন সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন প্রায় ১ বছর ধরে। এর আগে তিনি সংগঠনটির কার্যকরী সভাপতি ছিলেন। সিবিএ’র প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন রফিকুল ইসলাম, তিনি অবসরে যাওয়ার পর সারোয়ার হোসাইন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেন। তাছাড়া এই জুটির বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় প্রায় ১৮শ’ কর্মচারীর অধিকাংশই তাদের উপর ক্ষুব্ধ। ইলেকশন দিলে সারোয়ার হোসাইন এই পদে আর বহাল থাকতে পারবেন না। কারণ তার দুর্নীতির পরিমাণ এতোই বেশি যে, যা কর্মচারীদের ভাবিয়ে তুলেছে। তবে উপরের স্যারদের সাথে সারোয়ার হোসাইনের বেশ সখ্যতা থাকায় দুদক এর মামলা সহ সব অনিয়ম দুর্নীতি করেও বহাল তবিয়তেই আছেন। বিআইডব্লিটএ’র কর্মচারীদের প্রশ্ন, একজন সিবিএ নেতার নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা, ধন-সম্পদ এবং ব্যাংক ব্যালেন্স এর অভিযোগ। দুর্নীতিপরায়ণ এই ব্যক্তির নিকট থেকে সাধারণ কর্মচারীরা কি আশা করতে পারেন। তার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। উপরন্তু সারোয়ার হোসাইন এর প্রতিনিয়ত ডিমান্ড বাড়ছেই বাড়ছে। অভিযোগ রয়েছে, টেন্ডার বাণিজ্য, নিয়োগ, বদলি এবং ইজারা ঘাট সহ বিভিন্ন তদবিরে মন্ত্রীর নাম ব্যবহারও করেন এই সিবিএ নেতা। যা মন্ত্রী নিজেও অবগত নন। তবে মন্ত্রীর একজন এপিএস তাকে সর্বদা সহযোগিতা করেন এমন গুঞ্জন আছে মতিঝিলস্থ বিআইডব্লিউটিএ ভবনে। বিএনপি নেতা শিমুল বিশ্বাস এবং প্রয়াত শ্রমিক নেতা বাকির হোসাইন এর হাত ধরেই সারোয়ার হোসাইন এর উত্থান বলে ওয়াকিবহাল একটি সূত্র থেকে খবর জানা গেছে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, প্রাণের শালি যুক্তরাজ্য প্রবাসী নুরুন্নাহার পারভিনের নামে রাজধানীর খিলগাঁও, চৌধুরীপাড়া, মাটির মসজিদ সংলগ্ন বি- ১০৮ নাম্বার বাড়ির ৭ম তলায় প্রায় কোটি টাকা খরচ ১৬ শ’ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন সারোয়ার। বর্তমানে সপরিবারে সেখানেই বসবাসা করেন তিনি। নিজের টাকায় কেনা এই অট্টালিকা ফ্ল্যাট টি শালিকের টাকায় ক্রয় করা হয়েছে বলে সারোয়ার হোসাইন এর দাবি। তিনি কেয়ারটেকার হিসেবে থাকেন শুধু। টাংগাইলের কাগ মাড়ায় ( কাইয়্যামাড়া) কোটি টাকা খরচ করে জমি ক্রয় করেছেন তিনি। সেখানে ‘সারোয়ার তাজমহল’ নামে একটি অত্যাধুনিক বাড়ি করার সব সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সারোয়ার হোসাইন এর ধন-সম্পদের ফিরিস্তি আগামী পর্বে প্রকাশিত হবে।টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দেলডা গ্রামে সারোয়ার হোসাইন এর বাড়ি। সেখানে বাপ-দাদার আমল থেকেই বেশ জমা-জমি আছে। সারোয়ার হোসাইন এলাকার মানুষের কাছে দানবীর এবং জনদরদি হিসেবে পরিচিত। চাকরি সহ বিভিন্ন আর্থিক সহযোগিতা করে থাকেন সারোয়ার হোসাইন।
সিবিএ নেতা সারোয়ার হোসেন পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে যাদের চাকরি দিয়েছেন তারা হলেন, স্ত্রী কামরুন নাহার মলি, পদবি -ট্রেসার। আপন ফুফাতো ভাই আব্বাস আলী। আপন মামাতো ভাই আশরাফ। আপন চাচাতো শ্যালক আহসানুল হক কাইয়ুম, পদবি-শুল্ক আদায়কারী। চাচাতো ভাই শামসুল আলম মনি।,আপন খালু আব্দুল জলিল, পদবি – শুল্ক আদায়কারী।ভাবি – নাজমা বেগম, পদবি -সহকারী। খালাতো ভাই – আনিসুর রহমান, পদবি -শুল্ক আদায়কারী। আপন ভাতিজির জামাই – তাইজুল, পদবি -ট্রেসার। আপন খালাতো ভাই আনু, পদবি -সহকারী। আপন মামা ইউসুফ। চাচাতো শ্যালক কাইয়ুমের স্ত্রী রুমে না আক্তার, পদবি -নিম্নমান সহকারী। আপন খালাতো ভাই নজরুল ইসলাম, পদবি -গাড়ি চালক। চাচাতো ভাই -মোজাফফর হোসেন, পদবি -অফিস সহায়ক। আপন খালাতো ভাতিজা আরশাদ, পদবি -অফিস সহায়ক। আপন ভাতিজা -আতিক হাসান, পদবি -অফিস সহায়ক। চাচাতো ভাতিজা -আতোয়ার রহমান, পদবি – অফিস সহায়ক। ভাতিজা শওকত আলী, পদবি -টার্মিনাল গার্ড। আপন ভাতিজা -জুয়েল রানা, পদবি -টিসি। ফুফাতো ভাই আজগর, পদবি -নিম্নমান সহকারী। ভাগিনা -আনারুল ইসলাম -রেকর্ড কিপার। ভাতিজা -সোহেল রানা, পদবি -পাইলট। চাচাতো ভাতিজা -আব্দুল মালেক -পদবি- লস্কর। ভাতিজা -হাসান, পদবি -অফিস সহায়ক। চাচাতো ভাতিজা -হজরত আলী, পদবি- টার্মিনাল গার্ড। চাচাতো ভাতিজা শান্ত, পদবি -লস্কর। ভাতিজা সবুজ শেখ, পদবি- লস্কর। ভাতিজা মশিউর রহমান, পদবি -গ্রিজার।
Leave a Reply