সিলেট প্রতিনিধি:
ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে ফের বন্যা দেখা দিয়েছে সিলেটে। সুরমা, কুশিয়ারা, পিয়াইন, গোয়াইন, ধলাইসহ সবগুলো নদীর পানি বেড়েছে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ৯টায় সুরমা, কুশিয়ারা, সারি গোয়াইন নদীর ৬টি পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। সীমান্তর্বতী উপজেলাগুলোতে বন্যা দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন সতর্কতা জারি করেছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। নদীর ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি ১০ দশমিক ৭৯ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এই পয়েন্টে বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। আর ১ পয়েন্ট বাড়লেই বিপৎসীমা ছাড়বে।
এছাড়া, কুশিয়ারা আমলশীদ পয়েন্টে ৭১ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৩, শেওলা পয়েন্টে ২২, শেরপুর পয়েন্টে সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সারি গোয়াইন নদী বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সবকটা নদ নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
পাউবো সিলেটের কর্মকর্তারা বলছেন, সিলেটের সীমান্ত এলাকায় প্রবাহিত নদ-নদীগুলোর পানির বাড়া-কমার বিষয়টি ভারতে বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে। সিলেটে কম বৃষ্টি হলেও ভারতের বৃষ্টির ফলে পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্রবাহিত হয়। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।
সিলেট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৩টি উপজেলার মধ্যে ১০টি উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রে রোববার পর্যন্ত ৮ হাজার ৩০৮ জন আশ্রয় নিয়েছেন। জেলায় ৬৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে ১৯৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে লোক উঠেছেন। তবে সিলেট সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজন নেই।
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। যার জন্য পানি বাড়ছে। বুধবার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত থাকবে। আবহাওয়া ভালো হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী পরিচালক শাহ মো. সজিব হোসাইন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ২৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আরও ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, বন্যার আগাম প্রস্তুতির কথা আগেই বলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ মে সিলেটের নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। এরপর জুন মাসের মাঝামাঝিতে সিলেটে ফের বন্যা হয়। প্রথম দফায় জেলার সাড়ে ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়েছিলেন ও দ্বিতীয় দফায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হন। দ্বিতীয় দফার বন্যার পানি কমতে না কমতে তৃতীয় দফায় ফের বন্যার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় অনেকটা ভয় আতঙ্কে সিলেট অঞ্চলের মানুষ।
Discover more at Max-Zero
Powered by Max-Zero
Leave a Reply