প্রতিবেদকঃ কায়েশ ইবনে আনোয়ার।
ভারত ইস্যুতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এইবার কোনও চুক্তি হয় নাই। সমঝোতা স্মারক আর চুক্তি— দুইটা কি এক? পড়াশোনা করেন না? ডিপ্লোম্যাসির ভাষা জানেন না? সমঝোতা স্মারক আর চুক্তি এক কথা নয়।
সোমবার (১ জুলাই) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় এ সব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা পদ্মা সেতুর জন্য মালয়েশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক করেছিলাম, পরবর্তী সময়ে নিজের টাকায় করেছি। যদি চুক্তি করতাম তাহলে আমরা বাধ্য হতাম তাদের সঙ্গে করতে। নিজস্ব ধারে শেখ হাসিনা এই পদ্মা সেতু করেছেন।
বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবেন না। ১৯৭৫-এর পর সাড়ে তিন হাজার পিস শাড়ি নিয়ে লাল গালিচা সংবর্ধনা নিয়ে নতুন দিল্লিতে কারা গিয়েছিল? ওই যে ফিরে এলেন ঢাকা বিমানবন্দরে, সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করলো গঙ্গা চুক্তির কী হলো? খালেদা জিয়া কী বললো? আরে, আমি তো গঙ্গা চুক্তির কথা বলতে ভুলেই গেছি। আপনারা সব কিছুই ভুলে যান।
গঙ্গা চুক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করেছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বন্ধুত্ব থাকলে অবিশ্বাস থাকে না, সন্দেহ থাকে না। বন্ধুত্ব আছে বলেই তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি নিয়ে আলোচনায় অনেক অগ্রগতি সাধন করেছি। বন্ধুত্ব আছে বলেই সমুদ্রসীমায় আরেকটা বাংলাদেশ পেয়েছি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভারতের নতুন সরকার আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছেন, যে সব সমস্যা সমাধান হয়নি সেগুলোর ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে এবং সমাধানের জন্য ইতিবাচক চেষ্টা আছে।
তিস্তার পানি চুক্তি নিয়ে তিনি বলেন, তিস্তার পানি নিয়ে সবাই বলে চুক্তি কেন হলো না? আমি আপনাদের জানাতে চাই, ভারত একটি ফেডারাল দেশ। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার ইচ্ছা করলে রাজ্য সরকারের ঐকমত্য ছাড়া পানি অন্য দেশকে দিতে পারে না। এটা ভারতের সংবিধানে লেখা আছে। এর আগে গঙ্গার পানি দিতেও পশ্চিমবঙ্গের জ্যোতি বসু সরকারের সম্মতি ছিল বলেই আমরা বুঝে পেয়েছি।
তিস্তার পানির ক্ষেত্রে মূল সমস্যা পশ্চিমবঙ্গের মমতা ব্যানার্জি সরকার উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যখন শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছিল তখনই গর্জে উঠেছেন মমতা। কলকাতা থেকে বলেছেন, কোনদিনও বাংলাদেশকে এই পানি দেবো না। এই হিস্যা আমরা দিতে পারি না।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন যদি মমতা না বলে দেয় তাহলে কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজি করাতে হবে, তাকে হা করাতে হবে। তা না হলে ভারতের সংবিধান এলাও (অনুমোদন) করে না বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত সরকার তাদের রাজ্যকে বাদ দিয়ে চুক্তি করবে। এই সুযোগ নেই।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম আতিক, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।
Leave a Reply