ক্রীড়া ডেস্ক:
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চলতি নবম আসরে আজ সোমবার (১০ জুন) নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ।
টি-২০ ফরম্যাটে আটবারের মুখোমুখিতে কখনই দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে পারেনি টাইগাররা। আর তাই এই নবমবারের চেষ্টায় আজ কি প্রোটিয়াদের হারের স্বাদ দিতে পারবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল?
বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হবে বিশ্বকাপের এই লড়াই। নাগরিক টিভি ও টফিতে দেখা যাবে এ ম্যাচটি।
ডালাসে শ্রীলংকাকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইতোমধ্যেই শুভসূচনা করেছে বাংলাদেশ। এছাড়া একই দলকে হারিয়েই এবারের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করেছিল প্রোটিয়ারাও।
বিশ্বকাপের ‘ডি’ গ্রুপে দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা, নেদারল্যান্ডস ও নেপালের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সমান ২ পয়েন্ট রয়েছে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের। তবে ডাচরা এক ম্যাচ বেশি খেলেছে। তাই বাংলাদেশ রয়েছে টেবিলের দুইয়ে।
সুপার এইটে ওঠার নিরিখে আজকের ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জিতলে সুপার এইট মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যাবে। তবে ব্যাটিং শক্তিধর দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানো বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জের হয়ে উঠতে পারে। এছাড়া নিউইয়র্কের পিচও ‘ভয়ংকর’ আচরণ করছে।
এ মাঠে আগে ব্যাট করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে শ্রীলংকা ৭৭ রানে অলআউট, ভারতের কাছে আয়ারল্যান্ড ৯৬ রানে অলআউট ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯ উইকেটে ১০৩ রান করতে পেরেছে নেদারল্যান্ডস। কঠিন এই পিচেই কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে শান্ত-লিটনদের জন্য। ক্রিকেটের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিউইয়র্কে টস জয়ই ম্যাচ জয়। মানে আগে টস জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিং করাতে পারলে জয় প্রায় সুনিশ্চিত।
আজ জিতলে ভালো, হারলেও বাংলাদেশের সুযোগ শেষ হয়ে যাবে না। সেন্ট ভিনসেন্টে আগামী ১৩ জুন নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ও ১৭ জুন নেপালের বিপক্ষে গ্রুপে নিজেদের বাকি দুটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচ জিতলেও সুপার এইটে খেলবে টাইগাররা। কেননা পাঁচ দলের এই গ্রুপ থেকে দুটি দল উঠবে সুপার এইটে। শ্রীলংকা এরই মধ্যে দুটি ম্যাচ হেরে বসেছে। কাজেই বাংলাদেশ শেষ দুটি ম্যাচ জিতলেই চলবে। তাই আজ ম্যাচটি হারলেও সুযোগ থাকবে বাংলাদেশের।
সুপার এইট ওঠার সমীকরণ মেলাতে শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটি ছিল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই ম্যাচের ফলের ওপরই অনেকটা নির্ভর করছিল সুপার এইটের সম্ভাবনা। এই ম্যাচে জিতে পূর্ণ দুই পয়েন্ট তুলে নেয় টাইগাররা। লংকা বধের পর শান্ত বলছিলেন, ‘এই জয়টা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরের তিন ম্যাচও গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের পরের ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে। ওই ম্যাচে নতুন করে পরিকল্পনা করতে হবে। ভালো ক্রিকেট খেলা ছাড়া উপায় নেই। বিশেষ করে আমরা ব্যাটসম্যানরা যদি অবদান রাখতে পারি তাহলে ভালো করতে পারব।’ শ্রীলংকা ম্যাচ থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস নিয়েই পরের ম্যাচে ভালো করতে চায় বাংলাদেশ। শান্ত বলেছেন, ‘এ ধরনের ম্যাচ জিতলে সবাই আত্মবিশ্বাসী থাকে। যেহেতু ম্যাচটা আমরা জিততে পেরেছি সবার বাড়তি আত্মবিশ্বাস থাকবে। আশা করি দ্বিতীয় ম্যাচটাও ভালো হবে।’
অবশ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত তিন ম্যাচের মুখোমুখিতে তিনটিই জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০০৭ বিশ্বকাপে ৭ উইকেটে, ২০২১ বিশ্বকাপে ৬ উইকেটে ও ২০২২ বিশ্বকাপে ১০৪ রানে জিতেছে প্রোটিয়ারা। সর্বশেষ সিডনিতে প্রোটিয়াদের ২০৫ রানের জবাবে বাংলাদেশ ১০১ রানে গুটিয়ে যায়।
সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের দেখা হয়েছে আটবার, যার কোনোটিতেই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। আজ তাই ইতিহাস আর ফর্ম দুটোই নিজেদের পক্ষে নিয়ে নামছে এইডেন মার্করামের দল। বাংলাদেশকে তাই জিততে হলে হিমালয় ডিঙাতে হবে।
Leave a Reply