ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি হয়েছে । এ জন্য ঢাকার আদালতের এজলাসকক্ষে আসামিদের জন্য তৈরি করা লোহার খাঁচায় (আসামির কাঠগড়া) দাঁড়াতে হয়েছিল এই নোবেল বিজয়ীকে। এই অভিজ্ঞতাকে ‘অভিশপ্ত জীবনের অংশ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এ এই মামলার শুনানি হয়। বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেন ১২ জুন অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের জন্য দিন রেখেছেন।
ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, শুনানির শুরুতে আদালত ড. ইউনূস ছাড়া বাকি আসামিদের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে বলেন। তখন ড. ইউনূস বলেন, তাঁর জন্য অন্যদের এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। তাই তিনি নিজেও লোহার খাঁচায় তৈরি আসামির কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়ান। মিনিট দুয়েক পর সবাই বিচারকের অনুমতি নিয়ে এজলাসকক্ষের বেঞ্চে গিয়ে বসেন।
শুনানি শেষে দুপুরে ঢাকার আদালত চত্বরে ড. ইউনূস সাংবাদিকদের বলেন, ‘লোহার খাঁচার তৈরি আসামির কাঠগড়া তো অপমানজনক। অপমান করার জন্য এটি করা হয়েছে। এটা তো আর সম্মান দেওয়ার জন্য বানানো হয়নি। অপমানের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বানানো হয়েছে। আজ আমি অভিশপ্ত জীবনের শীর্ষবিন্দুতে পৌঁছেছি। এই প্রথম আমাকে লোহার খাঁচায় দাঁড়াতে হলো।’
বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রাখার জন্য আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত হন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁকে হয়রানি না করতে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শতাধিক নোবেল বিজয়ীসহ সাবেক ও বর্তমান অনেক রাষ্ট্রপ্রধান।
তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তার কোনো ভিত্তি নেই বলে দাবি করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার মধ্যে কোনো সত্যতা নেই। যে জিনিস আমি দিয়ে দিয়েছিলাম, সেটার জন্য আমাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। আমার সঙ্গীরা আজ অভিশপ্ত। এটা আমার মনে কঠিনভাবে দাগ কেটেছে। আমার পরিবারকে আক্রমণ করেছে। আমার বাবাকে আক্রমণ করেছে। এটা আমার কাছে মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। এটা আমার অভিশপ্ত জীবনের অংশ।’
Leave a Reply