1. nurnobi.kuet16@gmail.com : Md Nur Nobi Khan : Md Nur Nobi Khan
  2. admin@manabatarkontho.com : admin24 :
  3. afruja@gmail.com : Afruja Talukder : Afruja Talukder
শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৫৮ অপরাহ্ন

অধিগ্রহণের অপেক্ষায় অপার সম্ভাবনাময় দেশের বৃহত্তম বীজ উৎপাদন খামার

  • প্রকাশিত : বুধবার, ৮ মে, ২০২৪
  • ৬২ বার পড়া হয়েছে

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের খাদ্য নিরাপত্তা, দারিদ্র্য বিমোচন ও উপকূলীয় মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে বীজ উৎপাদন খামার প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে সরকার। এতে করে উচ্চ ফলনশীল রোগমুক্ত ও মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। যা কৃষিতে অপার সম্ভাবনার দোয়ার উন্মোচন করবে আশা প্রকাশ করিা হচ্ছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলেই জমির অধিকগ্রহণের কাজ শুরু হবে, এরপরেই পুরোদমে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হবে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের বেশ কিছু কাজের অগ্রগতি হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলায় দেশের দক্ষিণ- পূর্বাঞ্চলে বৃহত্তম বীজ উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। যা কৃষিতে অপার সম্ভাবনার দোয়ার উন্মুচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় ও বিএডিসি সূত্রে জানা গেছে, দেশের দক্ষিণ- পূর্বাঞ্চলে বৃহত্তম বীজ উৎপাদন প্রকল্পটি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয় এবং প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ ২০২৬ সালের অক্টোবরে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এ লক্ষ্যে ৫৭২.২৬ একর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ফেনী জেলা প্রশাসক মোছাম্মৎ শাহীনা আক্তার গত বছরের ২০ ডিসেম্বর তারিখে ৪৮৯ নং স্মারকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়ে পত্র প্রেরণ করেন। এর প্রেক্ষিতি চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে সিনিয়র সহকারী সচিব শিউলি রহমান তিন্নীর স্বাক্ষরে ১০ নং স্মারকে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের মতামত চাওয়া হয়। নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান শেখ মো: শরীফ উদ্দিন এনডিসি গত ১৩ মার্চ ৩৫৬ নং স্মারকে জনস্বার্থে প্রচলিত আইন ও বিধি-বিধান প্রতিপালন সাপেক্ষে প্রকল্প বাস্তবায়নের পক্ষে তাদের মতামত জানিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পত্র প্রেরণ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই ভূমি মন্ত্রণালয় অধিগ্রহণের বিষয়ে মতামত প্রদান করবেন; এরপরই এই প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম শুরু হবে বলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানিয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে- দেশের খাদ্য নিরাপত্তা জোড়দার, দারিদ্র বিমোচন ও উপকূলীয় এলাকার জনগনের জীবনমান উন্নয়নে ৫৭২.২৬ একর আয়তনের একটি বীজ উৎপাদন খামার প্রতিষ্ঠা করা, চরাঞ্চলের ভূমির শস্য বিন্যাস ও শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধি করা, খামারের বিভিন্ন আধুনিক মেশিনারীজ সংগ্রহ করা, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে খড়া, জলমগ্নতা, লবনাক্ততা সহিষ্ণু ও রোগ প্রতিরোধী উন্নতমানের বীজ উৎপাদন বৃদ্ধি করে বিএডিসি’র বীজ সরবরাহ চেইনকে শক্তিশালী করা, কৃষক ও বীজ ডিলার প্রশিক্ষণ এবং প্রদর্শনী স্থাপন, অবকাঠামো নির্মাণ ইত্যাদি।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রকল্প মেয়াদে ২ হাজার ৪২৭ মেট্রিক টন বীজ উৎপাদন ছাড়াও পরবর্তিতে এই খামার থেকে প্রতি বছর বিভিন্ন জাতের নূন্যতম ১২০০ থেকে ১৫০০ মেট্রিক টন অতিরিক্ত বীজ উৎপাদন হবে। যা এসডিজির আলোকে বিএডিসির বীজ সরবরাহ চেইনকে আরো শক্তিশালী করবে। বীজ উৎপাদনের পাশাপাশি এই খামারে একটি উদ্যান ইউনিট থাকবে এবং মৎস্য চাষ, ডেইরী ও পোল্ট্রিসহ এগ্রো ইকোলজিকাল ডাইভারসিটির এক মেল বন্ধন তৈরি করবে। প্রকল্পটির উদ্দেশ্য এবং কার্যক্রম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (SYP), টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG), জাতীয় কৃষিনীতি (NAP) ও জাতীয় বীজ নীতি (NSP) এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অভিপ্রায়ে প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের আওতায় ৫.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং প্রায় ৪ মিটার প্রস্থের একটি আরসিসি সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য লে. জে. (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এবং ফেনী সদর আসনের সংসদ সদস্য জনাব নিজাম উদ্দিন হাজারী উদ্ভোধন করেন। রাস্তাটির সংযোগ অংশের নির্মাণ কাজ বর্তমানে শেষ পর্যায়ে আছে যা এলাকার জনগনের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী সুফল নিয়ে আসতে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে সোনাগাজী উপজেলায়র দরবেশ ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো: জামসেদ আলম জানান, এই এলাকার জমিগুলো এক ফসলী, পতিত, লায়েক পতিত নাল শ্রেণীর জমি। প্রকল্পটি অবহেলিত এই অঞ্চলের জনগনের জন্য নতুন আশার সঞ্চার করেছে। তিনি জনস্বার্থে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত এই প্রকল্পের কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়নের দাবী জানান।
এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ- পূর্বাঞ্চলে বৃহত্তম বীজ উৎপাদন প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ সারোয়ার জাহান জানান, এই প্রকল্পে ভূমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হবে এবং এখানে উৎপাদিত বীজের মাধ্যমে আবাদযোগ্য এরিয়া সম্প্রসারনের সুযোগ তৈরি হবে ও এই বাড়তি খাদ্যশস্য দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে । অধিকন্তু কৃষকের আয় বৃদ্ধি পাবে এবং গ্রামীন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে। এই প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং এলাকার দরিদ্র বিশেষকরে নারী কর্মীদের কৃষি কাজে সম্পৃক্ত হয়ে সাবলম্বী হবার সুযোগ তৈরী হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

এই প্রকল্পের সার্বিক বিষয়ে সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম জানিয়েছেন, এ ধরনের একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দেশে খাদ্য নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করার পথে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। এছাড়া দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জেলায় প্রতিকূল পরিবেশ সহিষ্ণু, স্বল্প মেয়াদি, উচ্চ ফলনশীল ও জলবায়ু অভিযোজনশীল বীজ কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদার করা সম্ভব হবে। এর ফলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিসহ খাদ্য নিরাপত্তা ও গ্রামীণ জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
Copyright © 2024 Manabatar Kontho
Theme Customized By BreakingNews