নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে এক দিনে তিন শিশুর মৃত্যুর হয়েছে। এর মধ্যে পূর্ব গোড়ান এলাকাতে জাহান (১২) ও খাদিজা আক্তার (৫) দুই শিশু, এবং বনশ্রী এলাকাতে এক প্রকৌশলী ও চিকিৎসক দম্পতির বাড়ি থেকে জবা আক্তার যুথি (১৩) নামের এক শিশু গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বাসার গৃহকর্তা প্রকৌশলী শাকিল উল আলম ও গৃহকর্ত্রী ইন্টার্ন চিকিৎসক নূর-ই-জান্নাতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা আটক করেছেন।
জানা যায়, শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে জাতীয় জরুরি নাম্বার ৯৯৯-এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পরে অচেতন অবস্থায় গৃহকর্মী জবাকে উদ্ধার করে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে রাত ১২ টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে খিলগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহিম বলেন, আমরা ৯৯৯ এ খবর পেয়ে খিলগাঁও থানার বনশ্রীর ডি-ব্লকে ৯ নম্বর রোডের ৫ নাম্বার বাড়ির তৃতীয় তলায় যাই। সেখানে গিয়ে জবা আক্তার যুথি নামে এক গৃহকর্মীকে গলায় ওড়না পেঁচানো ও ঝুলন্ত অবস্থায় পাই। পরে তাকে আমরা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাট জেলায়। প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি ওই গৃহকর্মীকে বকাঝকা দেওয়ায় এই ঘটনা ঘটে । তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসার গৃহকর্তা এবং গৃহকর্ত্রীকে থানায় আনা হয়েছে। এর পিছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা সেটি আমরা খতিয়ে দেখছি।
এর আগে রাত ৮টার দিকে পূর্ব গোড়ান এলাকার একটি বাসা থেকে উদ্ধার হয় সাবিহা জাহান (১২) নামে পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মেয়েটির চাচাতো ভাই ফারুক খান বলেন, সাবিহার বাবা শাহজাহান খান অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য। রাত ৮টার দিকে নিজের কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস নেয় সে। পরে তাকে দ্রুত স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয় তাকে। পরে ঢামেকের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন তাকে।
তবে কী কারণে পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েটি আত্মহত্যা করলো, সে ব্যাপারে কোনো ধারণা নেই বলে জানিয়েছেন চাচাতো ভাইটি।
এদিকে একইদিন বিকেলে একই এলাকার একটি পাঁচতলার বাড়ির ছাদে খেলার সময় নিচে পড়ে মৃত্যু হয়েছে খাদিজা আক্তার (৫) নামে আরও এক শিশুর। এ ঘটনায় শিশুটির ফুফা ইসহাক মিয়া (২০) গুরুতর আহত হয়েছেন।
খোঁজ নিতে গেলে শিশুটির মা রীনা জানান, ফারিয়াকে কোলে নিয়ে তার ফুফা ইসহাক খেলা করছিলেন ছাদে। এসময় ফারিয়াকে ছাদের পাশে থাকা একটি গাছ থেকে আম পেড়ে দিতে যান তিনি। কিন্তু আম ছিঁড়তে গেলে ছাদে জমে থাকা পানিতে পা পিছলে কোলে থাকা ফারিয়াসহ নিচে পড়ে যান তিনি। এ ঘটনায় শিশুটির ফুফা ইসহাক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
Leave a Reply